আব্বাকে মোটেই ছাড়তে চাইতো না। যেখানে যেখানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব আব্বা সেখানে তাকে নিয়ে যেতেন। মা ওর জন্য প্রিন্স স্যুট বানিয়ে দিয়েছিলেন। কারণ আব্বা প্রিন্স স্যুট যেদিন পরতেন রাসেলও পরতো। কাপড়-চোপড়ের ব্যাপারে ছোটবেলা থেকেই তার নিজের পছন্দ ছিল। তবে একবার একটা পছন্দ হলে তা আর ছাড়তে চাইতো না।
ওর (শেখ রাসেল) নিজের আলাদা একটা ব্যক্তিত্ব ছিল। নিজের পছন্দের ওপর খুব বিশ্বাস ছিল। খুব স্বাধীন মত নিয়ে চলতে চাইতো। ছোট মানুষটার চরিত্রের দৃঢ়তা দেখে অবাক হতে হতো। বড় হয়ে সে যে বিশেষ কেউ একটা হবে তাতে কোনও সন্দেহ ছিল না। জাপান থেকে আব্বার রাষ্ট্রীয় সফরের দাওয়াত আসে। জাপানিরা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন দেয়। শরণার্থীদের সাহায্য করে জাপানের শিশুরা তাদের টিফিনের টাকা দেয় আমাদের দেশের শিশুদের জন্য।
সেই জাপান যখন আমন্ত্রণ জানায় তখন গোটা পরিবারকেই আমন্ত্রণ দেয় বিশেষভাবে রাসেলের কথা উল্লেখ করে। রাসেল ও রেহানা আব্বার সাথে জাপান যায়। রাসেলের জন্য বিশেষ কর্মসূচিও রাখে জাপান সরকার। খুব আনন্দ করেছিল রাসেল সেই সফরে।
তবে মাকে ছেড়ে কোথাও ওর থাকতে কষ্ট হয়। সারাদিন খুব ব্যস্ত থাকতো কিন্তু রাতে আব্বার কাছেই ঘুমাতো। আর তখন মাকে মনে পড়ত। মার কথা মনে পড়লেই মন খারাপ করতো। আব্বার সঙ্গে দেশেও বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দিতো।
সূত্রঃ শেখ হাসিনার লেখা ‘আমাদের ছোট রাসেল সোনা’ বই হতে সংগৃহীত